খৃষ্টীয় মূল্যবোধ

তৃতীয় শ্রেণি (প্রাথমিক স্তর ২০২৪) - খ্রিষ্টধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা - প্রার্থনা ও বিশ্বশান্তি | | NCTB BOOK
1

পাঠ: ৩

খ্রীষ্টিয় মূল্যবোধ

 

মানুষ নিজের মঙ্গল ও জগতের কল্যাণ ভেবে, কতগুলি গুণাবলী স্বাধীনভাবে বেছে নেয়। প্রয়োজনে সে যে কোনো ত্যাগ-স্বীকার করে, তা নিজ জীবনে অনুশীলন করে। এই গুণাবলীগুলোই হলো মূল্যবোধ। এই মূল্যবোধগুলির কারণেই মানুষ জগত ও মানুষের কল্যাণে ব্রতী হয়। যীশুখ্রীষ্ট নিজে অনেক গুণের অধিকারী ছিলেন। মঙ্গল সমাচারে যীশুর জীবন ধ্যান করলে আমরা দেখতে পাই, যীশু সকল মানুষকে ভালোবাসতেন এবং সেবা করতেন। তিনি মানুষকে ক্ষমা এবং অসুস্থকে নিরাময় করতেন। তিনি ন্যায্যতার পক্ষে কাজ করেছেন। তাঁর আরও কতগুলি বিশেষ গুণ হলো- পরোপকার, শ্রদ্ধা, সহানুভূতি, আশা, শান্তি, সম্প্রীতি ও সততা। পিতা ঈশ্বরের প্রতি তাঁর অগাধ বিশ্বাস ছিলো। তিনি গভীর বিশ্বাস নিয়ে পিতার কাছে প্রার্থনা করতেন। এই গুণগুলি যীশু স্বেচ্ছায় ও স্বাধীনভাবে বেছে নিয়ে মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করতেন। তাই আমরা বলতে পারি, ভালোবাসা, সেবা, ক্ষমা, পরোপকার, ন্যায্যতা, ঈশ্বরে বিশ্বাস ও প্রার্থনা যীশুখ্রীষ্টের জীবনের প্রধান মূল্যবোধ। এই সব মূল্যবোধ যীশু নিজ জীবনে ধারণ করেছেন। তারজন্য তিনি চরম মূল্য দিয়েছেন ক্রুশে মৃত্যুবরণ করে।

 

প্রভু যীশু খ্রীষ্টের শিক্ষায় অনেকগুলো মূল্যবোধ লক্ষ্য করা যায়, যেমন, বিশ্বাস, আশা, ভালোবাসা, ক্ষমা, দয়া, সেবা, পরোপকার, শ্রদ্ধা, সহানুভূতি, ধৈর্য, শান্তি, সম্প্রীতি, সততা ও ন্যায্যতাসহ অনেক মূল্যবোধ। এই মূল্যবোধগুলো জীবনে অনুশীলন করার জন্য যীশু আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন। মানুষ যখন বিশ্বস্তভাবে এই মূল্যবোধগুলো নিজের জীবনে চর্চা করে তখন সে হয়ে ওঠে সমাজের একজন আদর্শ মানুষ। যীশু, ঈশ্বর ও মানুষকে ভালোবাসতে বলেছেন।

 

যীশু শত্রুকে ক্ষমা করতে শিক্ষা দিয়েছেন। পবিত্র বাইবেলে লেখা আছে, "তোমার শত্রু ক্ষুধিত হলে, তাকে খেতে দাও; পিপাসিত হলে জল দাও।" (হিতোপদেশ ২৫:১)। অসহায় মানুষদের প্রতি দয়া ও সহানুভূতি দেখাতে তিনি শিক্ষা দিয়েছেন। সমাজে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা করতে ও শান্তি স্থাপন করতে বলেছেন। তাই একজন পরিপূর্ণ ও ভালো মানুষ হবার জন্য আমরা যীশুর শিক্ষা অনুসরণ করবো। খ্রীষ্টিয় মূল্যবোধে অনুপ্রাণিত হয়ে, সৎ জীবন যাপন করবো। খ্রীষ্টিয় মূল্যবোধগুলো নিজ জীবনে ও সমাজ জীবনে চর্চা করতে সচেষ্ট হবো। যারা প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে ভালোবাসেন তারা প্রত্যেকেই তাঁর শেখানো মূল্যবোধগুলো চর্চা করে থাকেন।

ক) ভেবে লিখি।

 

i) খ্রীষ্টিয় মূল্যবোধ বলতে কী বুঝি? 

ii) যীশুর জীবনের তিনটি মূল্যবোধ লিখি।

iii) মূল্যবোধগুলো কেন চর্চা করা প্রয়োজন?

iv) আমি কীভাবে যীশুর শেখানো মূল্যবোধগুলো চর্চা করতে পারি?

ⅴ) আমি কীভাবে যীশুর বন্ধু হয়ে উঠতে পারি?

 

খ) ৫টি খ্রীষ্টিয় মূল্যবোধের নাম লিখি।

 

ক্রমিক

মূল্যবোধ

 

i) 

 

 

 

ii) 

 

 

 

iii) 

 

 

 

iv) 

 

 

 

v) 

 

 

 

গ) সঠিক তথ্যে টিক (✓) চিহ্ন এবং ভুল চিহ্নে (x) দেই।

 

i) আমাদের সৎ জীবন-যাপন করা উচিত। () 

ii) মিথ্যা কথা বললে পাপ হয় না। () 

iii) শত্রুকে ভালোবাসা দরকার নাই। ()

iv) অসহায় লোকদের প্রতি দয়া ও সহানুভূতি দেখানো দরকার। () 

v) যীশু সব মানুষকে ভালোবেসেছেন। () 

vi) সব ক্ষেত্রে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা করা দরকার। ()

 

এ পাঠে শিখলাম

- খ্রীষ্টিয় মূল্যবোধ কী এবং খ্রীষ্টিয় বিশ্বাসের জীবনে তার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জেনেছি।

Content added || updated By
Promotion